July 3, 2025, 6:11 am

প্রান্তিক বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ম্যাজিক জাল, হুমকির মুখে দেশীয় মাছ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক ও স্থানীয় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ম্যাজিক জাল। এই জালের মাধ্যমে পানির উৎস থেকে নির্বিচারে আহরণ করা হচ্ছে ছোট-বড় সব ধরণের মাছ, ডিমওয়ালা মা মাছ ও জলজ প্রাণী। এর ফলে বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সামনের দিনে দেশীয় মাছের চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হবে সরকারকে।

ম্যাজিক জাল, যা স্থানীয়ভাবে ‘বেহুন্দি জাল’, ‘চায়না জাল’ বা ‘অলকাতরা জাল’ নামেও পরিচিত, সেটি পলিথিনজাত ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি। এ ধরনের জাল পানির নিচে একবার ছড়িয়ে দিলে পোনা, চিংড়ির রেণু, এমনকি জলজ উদ্ভিদ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যায়।

স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রান্তিক বাজারগুলোতে এই জাল সহজলভ্য এবং অনেক সময় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও দালালচক্র মোটা অঙ্কের মুনাফা লাভের আশায় এসব জাল বাজারজাত করে যাচ্ছে।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি

পরিবেশবিদরা বলছেন, মাছের স্বাভাবিক প্রজনন চক্র ভেঙে দিচ্ছে এই ম্যাজিক জাল। এতে করে আমাদের পুকুর, নদী ও খাল-বিলগুলো ধীরে ধীরে প্রাণশূন্য হয়ে উঠছে। দেশীয় মাছ যেমন—পুঁটি, ট্যাংরা, শিং, মাগুর, কৈ ইত্যাদি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।

আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই

বাংলাদেশ মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুসারে, ক্ষতিকর জাল ব্যবহার ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মনিটরিংয়ের অভাবে এসব জাল অবাধে ব্যবহার ও বিক্রি হচ্ছে।

প্রস্তাবিত করণীয়

১. উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ম্যাজিক জালের বাজারজাত ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
২. সচেতনতা বাড়াতে স্থানীয়ভাবে জেলেদের প্রশিক্ষণ ও বিকল্প জীবিকার সুযোগ তৈরি করতে হবে।
৩. আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে।

এখনই যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম হয়তো দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ শুধু ছবিতে দেখেই চিনবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।


ফেসবুকে আমরা