নাঈম হাসান।।
মেঘনা উপজেলা—কাঠালিয়া ও মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত এক মনোরম ভৌগোলিক অঞ্চল। কিন্তু এর নিচে লুকিয়ে আছে এক গভীর সমস্যা—এই অঞ্চলের বেলে ও দোআশ মাটি। এই মাটি অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় বাধা।
প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো—এই অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হয় না। বেলে মাটির প্রকৃতি বিবেচনায় না নিয়েই নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঠিকাদারদের গাফিলতি, প্রকৌশলীদের দায়হীনতা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা মিলে এক ধরনের ‘বাধ্যতামূলক ভাঙন’ যেন এখন মেঘনার স্থায়ী চিত্র।
বর্ষা এলেই শুরু হয় ভোগান্তি। সামান্য বৃষ্টি হলেই সদ্য নির্মিত সড়ক ভেঙে পড়ে, ড্রেনেজ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে, মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি দিক যেমন ব্লক স্থাপন, যথাযথ কার্পেটিং বা সঠিক মাটির সংমিশ্রণ প্রয়োগ করা হয় না। ফলে কাজ টেকে না, উন্নয়ন হয় অস্থায়ী—দৃশ্যমান হয় কিছুদিনের জন্য, টেকসই নয়।
টেকসই উন্নয়ন বলতে শুধু কিছু কাজের ফাইল শেষ করে ফটোসেশনে থেমে যাওয়ার কথা নয়। উন্নয়ন হতে হবে এমনভাবে, যা বছরের পর বছর ধরে এলাকাবাসীর জন্য কার্যকর থাকবে। যে কাজ বর্ষা, বন্যা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েও অটুট থাকবে।
মেঘনাবাসী বছরের পর বছর ধরে একটাই প্রশ্ন করে আসছে—এই উন্নয়ন কি শুধুই বরাদ্দের খেলায় সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি সত্যিই মানুষ উপকার পাবে?
যদি সঠিক পরিকল্পনা ও প্রকৌশল পদ্ধতি অনুসরণ করে, প্রকৃত মাটির ধরন বুঝে নির্মাণ করা হয়, তাহলে সেই কাজ স্থায়ী হবে। না হলে সরকারের বরাদ্দ যুগ যুগ ধরে আসবে, আবার যাবে। অপচয় হবে কোটি কোটি টাকা, আর মেঘনাবাসীর দুর্ভোগ থাকবে একই রকম—অবসানহীন, করুণ।