বিপ্লব সিকদার।।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা একটি সম্ভাবনাময় জনপদ। রাজধানী ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। রয়েছে আধুনিক চলন্ত সিরির মার্কেট, সরকারি ডিগ্রি কলেজ, আধুনিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, এমনকি মহাসড়কের সাথেও রয়েছে সরাসরি সংযোগ। নদীবেষ্টিত এ জনপদ ঘিরে গড়ে উঠেছে নৌ ও সড়কপথনির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
রাজনৈতিকভাবে সচেতন, সামাজিকভাবে সম্প্রীতিপূর্ণ এবং প্রশাসনিক কাঠামোয় সুসংগঠিত একটি উপজেলা—এমন বাস্তবতায়ও মেঘনা আজও ‘দূর্গম’ উপজেলার তালিকায়? প্রশ্ন উঠে—এই তকমার ভিত্তি কী?
‘দূর্গম’ হিসেবে তালিকাভুক্তকরণ সাধারণত হয় যেখানে মৌলিক সেবা পৌঁছানো কঠিন, যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক, প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবন ব্যাহত হয় কিংবা প্রশাসনিক উপস্থিতি দুর্বল থাকে। কিন্তু মেঘনার ক্ষেত্রে এসব চিত্র অনেকাংশে এখন ইতিহাস। সত্য, চরাঞ্চলের কিছু এলাকায় এখনও খেয়া পারাপার কিংবা বর্ষায় কিছু অসুবিধা রয়েছে। তবে সমগ্র উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নপ্রবণ বাস্তবতায় ‘দূর্গম’ শব্দটি আজ বেমানান।
এই ‘দূর্গম’ তকমা শুধু মর্যাদাহানিকর নয়, বরং উন্নয়ন নীতিতে একধরনের বৈষম্য তৈরি করে। কারণ এধরনের আখ্যা একদিকে যেমন আধুনিক প্রকল্প ও সরকারি বরাদ্দ থেকে মেঘনাকে বঞ্চিত করে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের মনোভাবেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তাই সময় এসেছে মেঘনার ‘দূর্গম’ তকমা সরিয়ে দিয়ে এর প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণ করার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উচিত একটি আধুনিক তথ্যনির্ভর সমীক্ষার মাধ্যমে মেঘনার বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরা এবং তালিকা হালনাগাদ করা।
মেঘনা আর পিছিয়ে নেই—এখন সময়, তাকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার।
-সাংবাদিক।