জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আসন্ন নির্বাচনে কোনো দল বা জোটের সঙ্গে ক্ষমতা বা আসন ভাগাভাগির ভিত্তিতে সমঝোতায় যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রোববার রাজধানীর শাহবাগের আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে নীতিগত ভিত্তিতে, কিন্তু ক্ষমতা বা সুবিধা অর্জনের জন্য নয়। তাঁর ভাষায়, “আমরা যদি একটি আসনও না পাই, এনসিপির আদর্শ, নীতি ও লক্ষ্য অটুট থাকবে।” তিনি স্পষ্ট করেন যে দলটি নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনৈতিক আপোসে যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখ্য সমন্বয়ক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, প্রচারণায় গেলে এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হুমকি-ধমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। এমনকি তাঁদের পরিবারকেও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। প্রশাসনে দলীয় প্রভাবের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, প্রশাসনে এখনো আওয়ামী সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বহাল থাকায় নির্বাচনী পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। দ্রুত তাঁদের সরানোর দাবি জানান তিনি।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এনসিপি এবার সৎ প্রার্থী নির্বাচন করছে, যা দেশের ৫৩ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় চমক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখতে সেই আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সংসদে যাওয়া প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য, সংস্কার প্রক্রিয়া সরকারের দায়িত্ব হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির অভাবে তা বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে; এনসিপি সংসদে গেলে সংস্কার বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তর) সারজিস আলম জানান, এনসিপি আগামী নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে যেতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করছে। ‘ব্যালট বিপ্লবের’ মধ্য দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই এখন দলের মূল লক্ষ্য।
এদিকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা জানান, দলটির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১ হাজার ৪৮৪ জন। রবি ও সোমবার দু’দিন ধরে আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। পরে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
—