November 23, 2024, 4:31 pm

গ্রামে হিন্দু আর কেউ নেই, সৎকারে এগিয়ে এলেন মুসলিমরাই

৩০ নভেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আসানসোলের একটি গ্রামে বসবাস করে একটি মাত্র হিন্দু পরিবার। শনিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সেই পরিবারের বয়জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি রামধনু রজকের (৮০) মৃত্যু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবরটি জেনে যান গ্রামের মুসলিম বাসিন্দারা। তারপর গ্রামের সবার সম্মতিতে হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী তাকে সৎকারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আসানসোলের জামুরিয়া থানার অন্তর্গত গ্রামটির নাম ‘দেশেরমোহন’। রাতেই প্রতিবেশীরা খবর দেন রামধনু রজকের ছেলে ও মেয়েদের। সকালে তার এক ছেলে গ্রামে আসেন। বাকিরা অন্য রাজ্যে থাকায় তাই সৎকারের জন্য আসতে পারেননি।

এক সময় জননগর কোলিয়ারি এলাকায় বসবাস ছিলো রামধনুর। পরবর্তীকালে তিনি দেশের মহান গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামে তিনি পাথরের বাসনপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। এভাবেই চলছিলো। পরবর্তীতে মৃত্যু হয় স্ত্রীর। গ্রাম ছাড়েন সন্তানরা। ফলে কার্যত একাই থাকতেন বৃদ্ধ।

শনিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দুর্গাপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান প্রতিবেশীরা। শেষ পর্যন্ত রানীগঞ্জের এক হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়।

গ্রামবাসী শেখ ফিরদৌস বলেন, রামধনুর মৃত্যুর সময় পরিবারের কেউ পাশে ছিলেন না। তাই আমরা দায়িত্ব নিয়ে পারলৌকিক ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করি। পরে অবশ্য তার পরিবারের সদস্যরা আসেন।

মৃতের ছেলে রামবিলাস রজক বলেন, আমাদের আদি বাড়ি বিহারে হলেও আমরা সবাই এই বাংলাতে বা জামুড়িয়াতেই থাকি। বৃদ্ধ বাবাকে ছেড়ে আমরা বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলাম আবদুল চাচা, রহমত উদ্দিন, আতাউদ্দিন চাচাদের ভরসায়। বিপদের দিনে শেষ পর্যন্ত তারাই পাশে দাঁড়ালো।

জামুড়িয়াবাসীর দাবি, দেশের মহান গ্রাম প্রকৃত অর্থেই মহান তা প্রমাণিত হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দৃশ্যে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা