১৪ ডিসেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১ এর ৯ (১) ধারা অনুযায়ী যোগদানের দিন থেকে পরবর্তী তিন বছর মেয়াদে কমিশনার নিয়োগ দিয়ে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, বিটিআরসির কমিশনার পদে নিয়োগ দিয়ে সরকারের সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা এবং সব সুবিধাদিসহ একই আইনের ৭(১) ধারা অনুযায়ী তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।
একজন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান, তিনজন কমিশনার ছাড়াও মহাপরিচালক হিসেবে পাঁচজন কর্মকর্তা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে দায়িত্ব পালন করেন।
অপর আদেশে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রাক্তন সিনিয়র জেলা ও দায়লা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে তিন বছরের জন্য বিটিআরসির কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শ্যাম সুন্দর সিকদার সর্বশেষ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সচিব থাকা অবস্থায় অবরোত্তর ছুটিতে যান। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি তাকে অবসর দেওয়া হয়।
শ্যাম সুন্দর সিকদার এরআগে আইসিটি বিভাগের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভিাগে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিটিআরসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব চালিয়ে আসা মো. জহুরুল হকের মেয়াদ গত ৪ ডিসেম্বর শেষ হয়।
১৯৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা শ্যাম সুন্দর সিকদার আইসিটি বিভাগের আগে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ১৯৬০ সালে তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার পূব-মাদারীপুরের নড়িয়া থানার লোনসিং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে এটি শরিয়তপুর জেলার অন্তর্গত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে ১৯৮১ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে এমবিএ ডিগ্রি প্রাপ্ত হন।
শিক্ষাকতা দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করলেও ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান। তিনি ১৯৮৪ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৬ সালে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করে মাঠ পর্যায়ে এবং সরকারের গুরূত্বপূর্ণ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৫ সালে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব হন। এরপর সাভারস্থ বিপিএটিসিতে পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং ২০১০ সালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। সেখানে দায়িত্ব পালন অবস্থায় ২০১২ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং কিছুদিন পর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি বিসিকের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন।
সাহিত্যকর্ম এবং সাংষ্কৃতি অঙ্গনেও তার বিচরণ আছে। তিনি একজন বহুমাত্রিক লেখক ও গবেষক। তার লেখায় সমকালীন জীবন, সমাজ ব্যবস্থা, স্থানীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আকর অসাধারণভাবে ফুটে ওঠেছে। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী এবং প্রবন্ধ ইত্যাদি সকল মাধ্যমে তার অবাধ বিচরণ অবারিত এবং সাহিত্য বিচারে তা সমুজ্জ্বল ও বটে।
তিনি এক পুত্র ও এক কণ্যা সন্তানের জনক। পুত্র অরিজিৎ সিকদার, কণ্যা অন্নেষা সিকদার। স্ত্রী সুপ্রেমা সিকদার।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।