ডেস্ক রিপোর্ট।।
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সক্রিয় নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। পারভীন আক্তার (২৪) নামে ওই সদস্য কক্সবাজার সদরের পূর্ব হামজারডেল গ্রামের বাসিন্দা। তার কাছ থেকে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
এটিইউ জানায়, গ্রেফতার পারভীন আক্তার মৎস্য খামারের আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতে আসা সদস্যদের আবাসন সুবিধা ও কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্নাবান্নাসহ নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতো।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) এটিইউয়ের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত মাসের ৯ জুন নেত্রকোনা মডেল থানাধীন বাসাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মৎস্য খামার পরিচালনার আড়ালে আনসার আল ইসলামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ পায় পুলিশ। এরপর এটিইউয়ের বোম্ব ডিসপোজাল ও সোয়াট টিমসহ নেত্রকোনা জেলা পুলিশ যৌথভাবে ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগজিন ও তাজা গুলি, দূরবীন, কম্পাস, ওয়াকিটকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, এসএসডি, মোবাইল ফোন, পিকআপ গাড়িসহ মোট ৮৬ ধরণের উগ্রবাদী প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
এটিইউ জানায়, ৩ বছর আগে এজাহারভুক্ত আসামি মো. হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ওরফে আনোয়ার আহমেদ ওরফে শাহজালাল ওরফে আরিফ (৩২) আড়াই একর জায়গার একটি খামার বাড়ি ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেয়। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম এবং তার স্ত্রী এজাহারভুক্ত আসামি উম্মে হাফসা (২৫), গ্রেফতার পারভীন আক্তার ও তার স্বামী রশিদ আহম্মদ (সাংগঠনিক নাম তানভীর) মৎস্য খামারের দোতলা পাকা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করতো। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ৫ জুন অস্ত্র-গুলিসহ নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রেফতার পারভীন আক্তার আত্মগোপন চলে যায়।
পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল আরও বলেন, গ্রেফতার পারভীন আক্তারসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা মৎস্য চাষের আড়ালে নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের সদস্যপদ লাভের জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছিল। খামারবাড়িটিকে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল তারা। নিজস্ব যানবাহন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন চক্রটি।
তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে খামার বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম স্থাপন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখেন। গ্রেফতার পারভীন আক্তার তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা সমর্থকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও ওই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা সদস্যদের আবাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্নাবান্না করাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতেন।