মানুষের মনের মানুষ আজহারুল ইসলাম মান্নান
সকালের আলো তখনো পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি। সোনারগাঁওয়ের কাঁচা রাস্তার ধুলা ভিজে আছে সারারাতের শিশিরে। রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে অল্প অল্প ভিড় জমছে। রাজনীতি, বাজারদর, এলাকার খবর—সব মিলিয়ে সকালের আলাপচারি শুরু হয়ে গেছে। এই সময় একজন লোক দোকানের সামনে থামে। মানুষ তাঁকে দেখেই বলে ওঠে—“মান্নান ভাই আইছে!”
এই এক দৃশ্যই বলে দেয় নারায়ণগঞ্জ–৩ আসনের রাজনীতিতে আজহারুল ইসলাম মান্নানের অবস্থান কোথায়। হ্যাঁ বলছিলাম না:গঞ্জ -৩ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান এর কথা। তাঁর পরিচয় কেবল একজন রাজনৈতিক প্রার্থী নয়; তিনি মানুষের দৈনন্দিন বাস্তবতার অংশ, দুঃসময়ের সহযাত্রী।
একজন নেতার সবচেয়ে বড় শক্তি—মানুষের পাশে থাকা
বেশিরভাগ জনপ্রিয় রাজনীতিকের গল্পে থাকে বক্তৃতা, মিছিল, সভা–সমাবেশের গাঢ় রঙ। কিন্তু মান্নানের গল্পে আলাদা রঙ আছে—মাটির গন্ধ, শ্রমিকের ঘাম, কৃষকের হাহাকার, অসহায় মানুষের মুখের কষ্টের রেখা।
মেঘনা নদীর পাড়ের এক জেলে বললেন—
“আমগো ঘরে যখন আগুন লাগে, তখন প্রথম ফোন করি মান্নান ভাইরে। উনি দূরে থাকলেও কোনভাবে খবর নেন। এইটাই নেতা।”
আরেকজন ট্রাকচালক যোগ করলেন—
“রাজনৈতিক লোক তো অনেক আছে, কিন্তু আমাদের দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকা মানুষ কম। মান্নান ভাই সেই কম মানুষের একজন।”
মানুষের এই সহজ–সরল কথাগুলোই তাঁর জনপ্রিয়তার উৎস। কোনো প্রচারযন্ত্র বা বিপুল প্রচারণা নয়—মানুষ তাঁর কাজ দেখে তাকে মনে স্থান দিয়েছে।
স্রোতের বিপরীতে উঠে আসার গল্প
আজহারুল ইসলাম মান্নানের রাজনৈতিক যাত্রা সহজ ছিল না। শুরু থেকেই তাঁকে মোকাবিলা করতে হয়েছে নানা প্রতিকূলতা, মামলা, হয়রানি, রাজনৈতিক চাপ। তবুও তিনি থেমে যাননি।
সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সাহসী গল্প। যখন পরিস্থিতি ছিল কঠিন, যখন প্রতিপক্ষের চাপ ছিল চরম—তখনই মানুষ তাঁকে বেছে নিয়েছিল।
একজন স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বললেন—
“মানুষ যখন নেতাকে নিজের মনে করে, তখন ক্ষমতার রঙ দেখে না। মান্নান ভাইকে মানুষ নিজের মানুষ মনে করে, তাই তার জয় হইছে।”
হামলা–মামলার মাঝেও মানুষের ঘরে ঘরে তাঁর উপস্থিতি
কয়েক বছর ধরে হয়রানি, পুলিশি তৎপরতা, রাজনৈতিক চাপ—এসব ছিল তাঁর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনের সহযাত্রী। কিন্তু যেটা ছিল না—তা হলো অভিযোগ, হতাশা, বা পালিয়ে থাকা।
তিনি ঘুরেছেন গ্রামে–গ্রামে, দোকানে–দোকানে, রাস্তায়–রাস্তায়।
মানুষের খবর নিয়েছেন, অসুস্থতা–দুর্ঘটনা–গৃহে আগুন—সবখানে আগেভাগেই পাওয়া গেছে তাঁর উপস্থিতি।
সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এক শ্রমিক বললেন—
“ওনারে কতবার ধইরা নিছিল, কিন্তু কোনোদিন ভয় পাইয়া দূরে থাকে নাই। আগের মতোই খোঁজ নিতে আইছে।”
এটাই তাঁর নেতৃত্বের আসল শক্তি। ভয় নয়—বিশ্বাস।
সরল জীবন, সহজ ব্যবহার—মানসিক সংযোগের রহস্য
আজহারুল ইসলাম মান্নানের পোশাকে বাড়তি আড়ম্বর নেই। কথায় নেই অহংকার। আর আচরণে নেই দূরত্ব।
এক দোকানদার হেসে বললেন—
“উনার গাড়ি আছে, লোক আছে—তাও নিজের হাতে চা বানায়া খায়। ভোট চায়ার সময় আসে না, সারা বছরই আসে।”
এই ‘সারা বছর উপস্থিত থাকা’—একজন নেতাকে রাজনৈতিক নেতা থেকে মানুষের কাছের মানুষে পরিণত করে।
ফিচার লেখার সময় কয়েক ঘণ্টা তার সঙ্গে থাকা যায়নি—কারণ তিনি বসে থাকেন না। কারও বাড়িতে ডাক এসেছে; হাসপাতালে যেতে হবে; ক্ষতিগ্রস্ত একটি পরিবারকে দেখতে হবে—এভাবেই তাঁর প্রতিদিনের গতি।
একাডেমিক ডিগ্রি নিয়ে সমালোচনা—মানুষের উত্তর আরও স্পষ্ট
রাজনৈতিক মহলে মাঝে মাঝে একটি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে—মান্নান কি যথেষ্ট একাডেমিক যোগ্য?
এই প্রসঙ্গে সোনারগাঁওয়ের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক উত্তর দিলেন—
“একটা কাগজ দিয়ে যদি নেতার যোগ্যতা ঠিক হইত, তবে অনেক শিক্ষিত নেতারা এত অজনপ্রিয় হইত না। মানুষের মন জিততে পারার ক্ষমতাই সবচেয়ে বড় যোগ্যতা।”
তিনি আরও বলেন,
“মান্নান শিক্ষিত না এটা যারা বলে তারা মানুষকে বোঝে না। তিনি মানুষের স্কুল থেকে শিখেছেন।”
ওই শিক্ষককে দেখে মনে হলো, তাঁর কথা কোনো পক্ষপাতিত্ব নয়; দীর্ঘ অভিজ্ঞতার উপলব্ধি।
সোনারগাঁও–সিদ্ধিরগঞ্জ: উন্নয়নের স্বপ্নে এক ভরসার নাম
এলাকার মানুষের কাছে মান্নান কেবল একজন জনপ্রিয় নেতা নন—একজন পরিকল্পনাবান ভবিষ্যতের প্রতিনিধিও। তাঁর উন্নয়ন–দৃষ্টিভঙ্গি স্থানীয়দের কাছে বিশেষভাবে মূল্যবান।
যানজটমুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন
সোনারগাঁওয়ের পর্যটন সম্ভাবনাকে অর্থনীতিতে রূপান্তর
খাল–বিল পুনঃখনন
তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের বিশেষ উদ্যোগ
শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অধিকার সুরক্ষা
সিদ্ধিরগঞ্জের এক শিল্প শ্রমিক বলেন—
“আমরা না হইতাম ভোটার—তারপরও মান্নান ভাই আমাদের অনেক কাজে দিছে। তাই আমরা ওনাকে নেতা মনে করি।
দলের ভেতরে প্রত্যাশা—ঐক্যবদ্ধ প্রচারণার ডাক
বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতারা স্পষ্ট জানাচ্ছেন—নারায়ণগঞ্জ–৩ আসনে মানুষ বদলের সুযোগ দেখছে। মান্নানকে ঘিরে দল যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, তাহলে এই আসনে ফলাফল বদলে দিতে পারে জনমত।
এক তরুণ সংগঠক বললেন—
“মান্নান ভাইকে আমরা শুধু দলের নয় এলাকার প্রার্থী মনে করি। ঐক্য যত মজবুত হবে, বিজয় তত নিশ্চিত।”
এই তরুণদের উচ্ছ্বাস তাঁর রাজনৈতিক শক্তিকে আরও বিস্তৃত করেছে।
রাজনীতিতে আবেগের নতুন কেন্দ্র
আজহারুল ইসলাম মান্নানের জনপ্রিয়তা শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ওপর দাঁড়িয়ে নয়—দাঁড়িয়ে আছে মানুষের জীবনের খুব কাছের অনুভূতির ওপর।
কারও সন্তানের চিকিৎসার খরচ তুলে দেওয়া, কারও ঘরের চাল ভেঙে গেলে নতুন টিন এনে দেওয়া, কোনো দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিককে হাসপাতালে নেওয়া—এসব ক্ষুদ্র কিন্তু গভীর মানবিক কাজে তিনি বহু মানুষের হৃদয়ের ভিতর জায়গা করে নিয়েছেন।
সোনারগাঁওয়ের এক নারী বললেন—
“আমি রাজনীতি বুঝি না। শুধু জানি আমার স্বামীর মৃত্যুতে তিনি প্রথম আসছেন। এটাই তো বড়।”
এই এক সরল বাক্যই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
মানুষের ভরসায় দাঁড়ানো এক নেতৃত্বের গল্প
ফিচার স্টোরি লেখার শেষে স্পষ্ট হয়ে ওঠে—আজহারুল ইসলাম মান্নানের গল্প রাজনীতির প্রচলিত গল্প নয়।
এ গল্প জনতার গল্প। খেটে খাওয়া মানুষের গল্প।
নেতৃত্বের সংজ্ঞা কখনো কখনো ডিগ্রি, পদ, প্রভাব দিয়ে তৈরি হয় না , তৈরি হয় মানবিকতার সহজ আলো ছড়িয়ে।
সোনারগাঁও–সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষ সেই আলোককণা নিজের জীবনে অনুভব করেছে বলেই আজ বলে
“মান্নান ভাই থাকলে এলাকায় শান্তি–উন্নয়ন–মানবিকতা ফিরে আসবে। এটাই আমাদের বিশ্বাস।”
এ বিশ্বাসই তাঁকে আজ নারায়ণগঞ্জ–৩ আসনের রাজনীতিতে মানুষের মনের মানুষ করে তুলেছে— আগামী দিনের নিশ্চিত বিজয়ী তিনি। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে সুউচ্চস্থানে পৌঁছে দেওয়ার প্রতীক হিসেবেই এই আসনে থাকবে এই আলোকচ্ছটা।