স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অনেকটা দায়সারা ও লোক দেখানোভাবে বালির বস্তা ফেলছে পাউবো।
১৯৩৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে টিনের ঘরের স্থলে একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালে এলজিইডি ভবনটি তিনতলা করে।
তেকানী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘স্কুলের কাছাকাছি যমুনা নদী চলে আসায় ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতেন অভিভাবকরা। ইউএনও ও শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি আমরা অবগত করেও কোনও লাভ হয়নি।’ স্কুলের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি রাশেদা বেগম বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা বারবার পাউবোকে অবগত করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’
কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী বাবলু মিয়া জানান, ভাঙন ঝুঁকির বিষয়টি ইউএনও সাহেবের মাধ্যমে পাউবোকে অবগত করা হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিতে জেনেও পাউবো শেষ মুহূর্তে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা অপ্রতুল ছিল। পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, ‘সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুরোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা সেখানে সুরক্ষার চেষ্টা করি। প্রায় ৫ হাজার জিও ব্যাগে বালি ভরে সেখানে ফেলা হয়। কিন্তু সুরক্ষা স্থানের অদূরে আকস্মিক ব্যাক হুইল বা ঘূর্ণাবর্তের কারণে বিদ্যালয়টিকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।’
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টির পাশে ভাঙন ঠেকাতে পাউবো থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার আগ থেকে সেখানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়েই ভাঙন ঝুঁকি ছিল। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টাও করেছি।’
নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙনের ব্যাপকতা পুরো এক কিলোমিটার অংশেই। কিন্তু সুরক্ষার পদক্ষেপ নেওয়া মাত্র ১০০ মিটার এলাকায়। নদীর কিনারে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে এলজিইডি এ ধরনের বিদ্যালয় স্থাপনের প্রকল্প নেওয়ার আগে পাউবোর মতামত নেওয়াটা জরুরি হলেও তা নেওয়া হয়নি। আগে থেকে পাউবোর মত নিলে হয়তো সরকারি অর্থের অপচয় হতো না।’
সিরাজগঞ্জ এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, জনপ্রতিনিধের চাপের কারণে তাদের নিজ নিজ এলাকায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন বা স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যমুনার পশ্চিম পাড়ে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের আগে পাউবো কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ঘুরেও সেরকম সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
জেলা প্রাথমিক অফিসার সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা বলেন, কাজিপুর ও সদরসহ জেলার ৯টি উপজেলায় ১৩৩টি ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা পাঠানো হয়েছে।