২৪ মার্চ ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম,
হারুনুর রশিদ শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের দায়িত্ব অবহেলায় বিপুল পরিমাণ ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। সোমবার ত্র ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ওষুধের মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২৩ মার্চ সোমবার দুপুরে শেরপুর জেলা শহরের গোপালবাড়ী এলাকার সদর উপজেলার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ওষুধ ভান্ডারসহ বিভিন্ন কক্ষ থেকে এসব ওষুধ উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এই কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ক্লিনিক) ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানের অনিয়ম, অবহেলা ও গাফিলতিতে এসব ওষুধ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সরকারি অর্থের যেমন অপচয় হয়েছে, তেমন বিভিন্নস্থান থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বক্তব্য সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে এই কেন্দ্রের দোতলা ও তিনতলা ভবনটি পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ওষুধ ভান্ডাারটি পরিচ্ছন্ন করার সময় দেখা যায়, সেখানে অব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পড়ে আছে। এসব ওষুধের মধ্যে মূল্যবান সেফট্রিয়াক্সন, মেট্রোনিডাজল, কটসন ইনঞ্জেকশন, স্যালাইন, গজ-ব্যান্ডেজসহ অজ্ঞান করার ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ রয়েছে। এ ছাড়াও বন্ধ্যাত্বকরণ উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণের জন্য শাড়ি ও লুঙ্গি রয়েছে। পরে এসব ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রীর অধিকাংশ ভান্ডার ও বিভিন্ন কক্ষ এবং ভবনের ছাদে পাওয়া যায়।সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন রহমান অমি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সিজার করার সমস্ত যন্ত্রপাতি থাকা সত্বেও কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ক্লিনিক) ডাঃ মো. মোস্াÍাফিজুর রহমান এই কেন্দ্রে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করেন না। গত দুই বছরে এই কেন্দ্রে মাত্র তিনটি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার হয়েছে। এছাড়াও ডা: মোস্তাফিজুর সিজার করতে আসা রোগীদের অন্যত্র প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেন। ফলে তাঁর অবহেলা ও গাফিলতিতে এসব মূল্যবান ওষুধ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে এবং রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা হবে বলে তিনি জানান ।অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ক্লিনিক) ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এখানে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। এতে কিছু ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরকারি নিয়মানুযায়ী শিগগির ‘ডেস্ট্রয়’ করা হবে বলে তিনি জানান ।এদিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে সোমবার দুপুরে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক ডা. পীযুষ চন্দ্র সূত্রধর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এতে চিকিৎসা কর্মকর্তা (ক্লিনিক) ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানের অনিয়ম এবং অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা ও আইনানুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।