October 16, 2025, 4:45 pm
সর্বশেষ:
মেঘনায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মেঘনার জলারপার নোয়াগাঁওয়ে গ্রামবাসীর উদ্যোগে ভোটকেন্দ্রে নতুন কক্ষ নির্মাণ হয় পদ দিন; নয়তো টাকা ফেরত দিন দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের তিনটি অভিযানে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা উদঘাটন সাহসিকতায় অনন্য নজির: পিপিএম পদকে ভূষিত হলেন এসআই খাজু মিয়া নির্বাচনী দায়িত্বে দক্ষতা বৃদ্ধিতে পুলিশের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত নিজের বিবেক লিজ দেবেন না: দুদক কমিশনার তিতাস নদীতে ভাসছে ‘মিস্ট্রি হাউস’, কৌতূহল ছড়াচ্ছে চারপাশে মেঘনার দম্পতি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত — এলাকায় শোকের মাতম মেঘনায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে মহড়া, র‍্যালি ও আলোচনা

উপহারটা তার জন্য ছিল না

রাফি ইসলাম :


শহরের সবচেয়ে দামি কর্পোরেট অফিসে রায়হান সাহেবের জন্মদিন। ঘরজুড়ে সুশোভিত বেলুন, কেক, আর সহকর্মীদের উচ্ছ্বাস। সবার চোখে মুখে হাসি, যদিও কেউ কেউ এই হাসির ভেতরেও অদৃশ্য হিসাব রাখছিল—কে কতটা ঘনিষ্ঠ, কে কতটা দূর।

রায়হান সাহেব ছিলেন অফিসের বিতর্কিত চরিত্র—মেধাবী, কিন্তু স্বার্থপর। পদোন্নতিতে অন্যকে ঠকিয়ে উপরে উঠতে পিছপা হননি কখনো।

একজন মানুষ, যিনি রায়হানকে সত্যিই অপছন্দ করতেন, তিনি হলেন জুনিয়র অফিসার—রাশেদ। সে চুপচাপ নিজের ডেস্কে বসে ছিল, কারও সঙ্গে মিশছিল না।


রাশেদ জানত—তার সুযোগ ফিরিয়ে নিয়ে রায়হান নিজেই পদোন্নতি পেয়েছেন। অভিমান, ক্ষোভ, ঘৃণা—সবকিছু মিলিয়ে সে রায়হানকে দেখতে পারে না।

তবু, দুপুরে কেক কাটার আগে, হঠাৎ দেখা গেল—রায়হান সাহেবের ডেস্কে একটি ছোট বাক্স রাখা। কে দিয়েছে, কেউ জানে না।

রায়হান খুলে দেখে—একটি পুরোনো কলম, আর সঙ্গে একটি চিরকুট:

> “এই কলম দিয়ে আমি আমার বাবার চাকরির দরখাস্ত লিখেছিলাম। তিনি পাননি। আপনি পেয়েছেন। হয়তো আপনি ভালো লেখেন।

আমার অপছন্দ থাকা সত্ত্বেও, আপনি যা পেয়েছেন—তা যেন মূল্যহীন না হয়।

– একজন সহকর্মী”

 


রায়হান বাকরুদ্ধ হয়ে বসে থাকেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন খুঁজে পায় না, কে এটা দিয়েছে। চিরকুটে নাম নেই, শুধু আত্মা আছে।

সেই মুহূর্তে রায়হানের হৃদয়ের এক অচেনা দরজা খুলে যায়। একটুখানি বিবেকে আঘাত লাগে।

সেদিনের পর থেকে অফিসে তিনি অন্য রকম আচরণ করতে শুরু করেন—সহনশীল, শ্রদ্ধাশীল, অনেকটা বদলে যাওয়া মানুষ।


রাশেদ কাউকে কিছু বলেনি। কেউ জানেও না উপহারটা সে দিয়েছিল।

তবে রাশেদের এক বন্ধু একদিন বলেছিল, “তুই কীভাবে পারলি ওকে এত মূল্যবান জিনিসটা দিতে?”

রাশেদ কেবল একটুখানি হেসে বলেছিল,

> “উপহারটা রায়হানের জন্য ছিল না, ছিল আমার নিজের আত্মমর্যাদার জন্য। আমি যাকে দেখতে পারি না, তাকেও ছোট হতে দেই না—এটাই আমার জয়।”
শেষ।

অপছন্দের মানুষের প্রতি আচরণ, আমাদের ব্যক্তিত্বের প্রকৃত মুখোশ খুলে দেয়।বিপরীতকে সম্মান করতে পারা, সত্যিকারের শক্তির প্রকাশ।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।


ফেসবুকে আমরা