বিপ্লব সিকদার।।
৫ আগষ্টের পর প্রান্তিক পর্যায়ে গর্তের ভেতর থেকে শুধু নতুন নতুন নেতার আবির্ভাব হচ্ছে। যাদের যন্ত্রনায় অতিষ্ট সাধারণ মানুষ। প্রায় ছাড়পোকার মতই যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। প্রথম দুমাস আওয়ামী লীগের নেতারা অন্তরালে চলে গেলেও এখন স্বার্থের বেলায় চেতনা ভুলে মিলেমিশে একাকার। পুলিশের মধ্যে রয়েছে এখনো অনেক হতাশার ছাপ। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছেনা। ফলে আইনশৃংখলার অবনতি লক্ষনীয়। নেতৃত্বের মধ্যে চলছে হযবরল- পরিস্থিতি। আওয়ামী লীগ আড়ালে বাকিরা বাইরে। সব দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেপরোয়া ভাব চলে আসছে। আবার কোথাও কোথাও কর্তৃত্ববাদ চালু হয়েছে। অতি স্বাধীনতার কারণে সকল দলের নেতাকর্মীরাই তৃণমূলের প্রশাসনের সাথে কাজ করতে যাচ্ছে। ছোট ছোট রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বড় দলের নেতাকর্মীরাও মোড়লপনার ভাবে আছে। এতে করে পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে নির্বাহী প্রশাসনে দেশ চালাতে সহযোগিতা দেওয়া ও নেওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তৃণমূল (উপজেলা) প্রশাসনের। রয়েছে প্রতিটি দলের সুবিধা নেওয়ার কোটা। অন্যদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ছাত্ররা সহযোগিতা ব্যপক ভাবে করছে প্রশাসনকে। এতে মতানৈক্য রয়েছে ব্যপক। কোথাও কোথাও বিএনপির একাধিক গ্রুপ থাকায় পোহাতে হচ্ছে বাড়তি ঝামেলা। সকলের মত ঠিক রাখতে গিয়েই দিনশেষ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সম্ভব হচ্ছেনা তৃণমূল প্রশাসনের। আবার কর্মকর্তাদের মধ্যে আওয়ামী ভুতের আছর এখনো রয়ে গেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বিশেষ করে থানা গুলোতে তদবিরবাজ অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। স্বস্থি তে কাজ করার মত পরিবেশ তৈরি হচ্ছেনা। ফলে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। নয়া নয়া নেতাদের মোড়ে মোড়ে পদচারণা, স্বস্ব দলের মহল্লায় মহল্লায় নেতার কথা মত আধিপত্য বিস্তার চলছে। ত্যাগী, আদর্শিক রাজনীতির চাইতে পেশি শক্তিকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রবনতাই দেখা যাচ্ছে অনেক। দলের নির্দেশনাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সভায় বক্তারা বক্তব্য দিলেও বাস্তবে তার উল্টো।গ্রামীণ জনগোষ্ঠী প্রায়ই অস্থিরতার ছোবলে কুক্ষিগত। পুলিশের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও হার্ড লাইনে যেতে পারছেনা। জাতী নেতাদের পাশাপাশি পাতী নেতাদের তদবিরে ক্লান্ত প্রশাসন। শত অস্বস্তি থাকা সত্ত্বেও মুখ ফুটে বলতে পারছেনা। কোথায় যেন একটা হতাশা ভুগছেন। গত ছয় মাস পার হলেও তৃণমূল প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছেনা। এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ী, বখাটে, উগ্রবাদী, মূর্খের ঔদ্ধত্য আচরণ করছে যার তার সাথে। সস্তায় ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদ মনোভঙ্গি কায়েম করছেন নেতারা। সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে সংকায় সচেতন মহল। প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই তাদের। ভদ্রলোকেরা লজ্জায় ঘর থেকে বের হয় কম। ছাড়পোকার উৎপাতে যেমন আরামের ঘুম হারাম করে দেয় ঠিক পাতী নেতাদের উৎপাতে একটি বিশৃঙ্খল সমাজ ব্যবস্থা চলছে। মাঝে মাঝে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে অপরাধী ধরলেও নতুন নতুন সাদাসিধা অপরাধীর জন্ম হয়েছে প্রতিটি এলাকায় ব্যঙ্গের ছাতার মতো। যোগ্যতা শুধু নেতার পিছনে ঘুরঘুর করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। এটাই একমাত্র পেশা। ছাড়পোকার আদলে গড়ে উঠা পাতী নেতাদের উৎপাত বন্ধ করা, আওয়ামী দোসর শুধু কর্মকর্তা নয় শুধু কর্মচারী গুলো আরও বেশি ইন্দ্বন দিয়ে সর্বক্ষেত্রেই অবাসযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করে প্রশাসনকে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষ অতি মাত্রায় অতিষ্ট হয়ে যাবে। অঞ্চল বেধে নেতার নেতৃত্বের সংস্কৃতি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে তৃণমূল প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া উচিত।
লেখক, সাংবাদিক